পথবনলতায়....


বাসখানি ছুটিয়া চলিতেছিল প্রায় একশো কুঁড়ি কিলোমিটার বেগে। ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক,তেলের মত রাস্তা,এই রাস্তাতে একশোর নিচে গাড়ি টানায় মজা নাই; ইহা যেন এই রাস্তার অলিখিত নিয়মই... তবে গাড়িতে যাত্রী বেশি থাকিলে যা হয় আর কি....



গাদাগাদি করিয়া ইঞ্জিন বাক্সের উপরে বসিয়াছি,ভরাডোবা আসিয়া গাড়ি থামিতেই চোখ পড়িল পথের ধারে দাঁড়ানো এক তরুণীর উপর,শুধুমাত্র সুন্দরী বলিলে ঈশ্বরের স্বহস্তে গড়া এ প্রতিমার সৌন্দর্যের চরমভাবে অসম্মান করা হইবে.. পরমা সুন্দরী বলিয়া যদি কিছু থাকে তবে সেই যে আমার দেখা প্রথম কেউ তা বিশেষভাবে বলিয়া দিবার মত আবশ্যিকতা নাই....
তাহার শুভ্র ললাট হইতে শুরু করিয়া পায়ের নখগুলি পর্যন্ত বোরখা ঢাকা তনুতে যে কি শোভা বিদ্যমান তাহা ভাষায় প্রকাশ করা আমার পক্ষে অসম্ভব....
তাহার অবিসাধারণ ভ্রুদ্বয়, মৃগআঁখির ন্যায় তাহার চক্ষু, টিকালো নাসিকাখানি,আর অসাধারন গোলাপী ঠোঁটের ভূবনমোহিনী হাসি,সব মিলাইয়া কি নিষ্পাপ-অপরুপ মুখশ্রী!
জীবনানন্দ শ্রাবস্তির কারুকার্য বনলতার মধ্যে দেখিয়াছিলেন,আর আমি যেন আজ দেখিলাম....
ইশ!
আমি যদি সেই খানেই সমাহিত হইতে পারিতাম....
বাসে উঠিয়া উপায়ন্তর না দেখিয়া ইঞ্জিন বাক্সেই বসিতে হইলো তার,একেবারে আমার পাশেই!
কি সৌভাগ্য!
কি সৌভাগ্য!

বাস চলিতে শুরু করিল,তাহার সুরভিত তনুর ঘ্রানে মাতাল হইবার দশা,,,
গাড়ির গতির ছন্দে তাহার অনিচ্ছাকৃত মৃদুস্পর্শ....
উফ!
প্রতিটি স্পর্শে প্রত্যেকবার দেহের প্রতিটি কোষে বিদ্যুতসম স্পন্দন খেলিয়া যাইতেছে....
নিজের উপর হইতে নিয়ন্ত্রণ যে পুরোপুরিভাবেই হারাইয়া ফেলিতেছি তা ভাল ভাবেই বুঝিতে পারিলাম,
এ কি হইতেছে আমার সাথে?
যেন অতল গহ্বরে তলাইয়া যাইতেছি......অ.... ত.... লে....

"আচ্ছা মানবী!
এই অনুভূতিই কি প্রেম?
তোমায় সত্যই ভালোবাসিয়াছি না এ কেবলই ক্ষণিকের উন্মাদনা?"
-"উম...ধরো নাহয় ক্ষণিকের উন্মাদনাই,ক্ষতি কি! ক্ষণিক কি এই মহাকালেরই অংশ নয়? ক্ষণিকের উন্মাদনা হতেই তো মহাবিশ্বের উৎপত্তি,ভুলে গেলে?"
-"তা বটে... তবে নাহয় তাইই হৌক,,,, কিন্তু..... তোমার যে একটা নাম হওয়া দরকার,মানবী"
-"সে তোমার ইচ্ছে,কত নামেই তো পুষ্পিত তোমার কল্পনারা...."

[to be continued]

Shayen Kabir
15 April 2016
10:45

মন্তব্যসমূহ